প্রথম প্রকাশ - ১৮৫০
স্কারলেট লেটার - রক্তিম লাল অক্ষর
মূল চরিত্র সমূহ
১. হেস্টার প্রাইন - মূল চরিত্র, স্কারলেট লেটার যার বুকে ছিল
২. আর্থার ডিমসডেল - পিউরিটান মিনিস্টার ও ধর্মজাযক - বোস্টন, পার্লের জন্মদাতা
৩. পার্ল - হেস্টার এবং ডিমসডেল এর অবৈধ সন্তান
৪. রজার চিলিংওয়ার্থ - হেস্টার এর বুড়ো স্বামী
৫. গভর্নর বিলিংহাম- বোস্টন এর আগের গভর্নর
৬. মিস্ট্রেস হিবিন্স - বিলিংহাম এর বোন
৭. জন উইলসন - বোস্টন এর বুড়ো পাদ্রী
ঘটনাঃ-
লেখক যখন সালেমের কাস্টম হাউজে সার্ভেয়র হিসেবে চাকরি করতেন, একবার তিনি লাল কাপড়ের মাঝে কিছু কাগজপত্র খুজে পেলেন এবং সেটার উপর একটি লাল "এ" অক্ষর ছিল। যা দেখে তিনি অবাক হলেন। অগ্রহ বশত তিনি তা খুলে দেখেন। এবং জানতে পারলেন সে লেখা গুলো লিখেছিলেন তার পূর্বে যিনি তার পদে আসীন ছিলেন। তার নাম ছিল জোনাথন পিউ। তাই তিনি সেই লেখা গুলো লিখে গিয়েছিলেন অন্য একজন বৃদ্ধের জবানী থেকে যার নাম ছিল হেস্টার প্রাইন। মূলত এই লেখা টা ছিল হেস্টার প্রাইন এর আত্মজীবনী। তারপর তিনি সেই লেখাটা কে এই নভেল এ পরিবর্তন করেছেন।
এই নভেলের ঘটনাটা শুরু হয় একটি জেলখানা থেকে, যেখানে একটি শাস্তিমঞ্চ ছিল। সেখানে উতসুক জনতা দাঁড়িয়ে আছে, আসলে সেখানে কি ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে সকলের আগ্রহ। সেখানে আসলে হেস্টার প্রাইন এবং রেভারেন্ড ডিমসডেল এর অনৈতিক সম্পর্কের কারনে তাদের শাস্তি হবে। হেস্টার প্রাইন এর কোলে একটি বাচ্চা। যার নাম পার্ল। সেখানে বোস্টন শহরের গভর্নর, পাদ্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিল। পার্ল তার পেটে থাকা অবস্থায় তাকে জেলে পোড়া হয়েছিল। যখন পার্ল এর জন্ম হল তখন তাকে এখানে এই জনতার মঞ্চে আনা হল, তখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করতে লাগলো, কেউ ভাল, কেউ খারাপ।
আর ব্যাপারটা ছিল হেস্টার প্রাইন আর আর্থার ডিমসডেল এর অনৈতিক কাজ এর বিচার, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে জনতা এবং পাদ্রী, গভর্নর কেউই জানে না তার হেস্টার প্রাইন কার সাথে অনৈতিক কাজ করেছে। এমনকি হেস্টার প্রাইন কে অনেকবার জিজ্ঞাসা করার পরও সে কাউকে বলে নাই, সেই ব্যাক্তি টি কে। তাকে তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হল। কেউ একজন মন্তব্য করল যে তার গলায় ঝোলানো "এ" অক্ষর টি দেখা যাচ্ছে না। বিচারের রায় ছিল যে, তাকে আজীবন গলায় এই অক্ষরটি ঝুলিয়ে রাখতে হবে। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে এই বিচারের ভার পড়েছিল, রেভারেন্ড আর্থার ডিমসডেল এর উপর। কিছুক্ষন পরে দেখল একজন লোক তাকে এক দৃষ্টিতে দেখছে, তাকে সে চিনতে পারল, সে তার প্রাক্তন স্বামী রজার চিলিংওয়ার্থ। সে জনতাকে জিজ্ঞাসা করল, তাকে কেন এই মঞ্চে দাড় করানো হয়েছে, জনতা তাকে হেস্টার প্রাইন এর পাপ কর্মের কথা বলল। হেস্টার তাকে কিছু একটা বলতে চাইল। কিন্তু চিলিং ওয়ার্থ তাকে ইশারা করে চুপ করিয়ে দিল। তারপর তাকে জেল খানায় নিয়ে যাওয়া হল।
হেস্টার প্রাইন এর কোলে ছোট্ট পার্ল
চিলিং ওয়ার্থ যখন হেস্টার প্রাইন কে ছেড়ে যায়, তখন সে রেড ইন্ডিয়ানদের সাথে যোগ দিয়ে ভেষজ উদ্ভিদ এবং এর মাধ্যমে চিকিৎসা পদ্ধতি শিখে নিয়েছিল। এদিকে জেলখানায় যখন পার্ল অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন পার্ল এর চিকিৎসার জন্যে চিলিংওয়ার্থ এর ডাক পড়ে। হেস্টার প্রাইন এতে রাজি হন না, কারন সে মনে করে চিলিংওয়ার্থ তার কন্যাকে মেরে ফেলবে। তখন চিলিং ওয়ার্থ তাকে প্রবোধ দেয় যে, তুমি যে পাপ করেছো, তার শাস্তি তুমি পেয়েছো, তোমার সন্তান তো কোন অপরাধ করে নাই, তাকে কেন তুমি কস্ট দিচ্ছ। তখন হেস্টার প্রাইন রাজি হল। পার্ল খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেল। এরপর হেস্টার প্রাইন যখন জেল থেকে ছাড়া পেল, সে তখন চিন্তা করল এই শহর থেকে সে চলে যাবে। পরক্ষনে সে তার চিন্তা করল, তার প্রেমিক ডিমসডেল এই শহরে থাকে, তাই সে এই শহর ছেড়ে যাবে না। সে শহরের কাছেই পাহাড়ি এলাকায় একটি ঘর নিয়ে থাকল। তার একটি গুন ছিল সে খুব ভাল সুচি কার্য জানতো। সে কাজ শুরু করল এবং তার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। পাশাপাশি তিনি আসে পাশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যায় এগিয়ে যেতেন। সকলের দুঃখ কস্টের খোজ খবর রাখতেন ও মানুষকে সাহায্য করতেন। তিনি তার আসে পাশে বিখ্যাত হয়ে গেলেন। তার বক্ষে যে একটি কলংক জনক অক্ষর ঝুলছে তা তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন। অবশ্য এই অক্ষরটি তাকে তার পাপের কথা মনে করিয়ে দিত। তিনি এটা খুলতেন না, কারনে তিনি মনে করতেন এটা যতক্ষন তার গলায় থাকবে তিনি পাপমুক্ত থাকবেন।
একবার তারা গভর্নর বিলিংহামের কাছে গেল। বিলিংহাম তাকে একটি দস্তানা বানানোর কাজ দিয়েছিল। তারা সেটা নিয়েই সেখানে গিয়েছিল। গভর্নর তাকে ডাকার আরো একটি কারন ছিল, সে একটি বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। যেহেতু হেস্টার একজন পাপী তাই তার সাথে থেকে থেকে তার মেয়েও একজন পাপী হিসেবে গড়ে উঠবে। তাই সে চিন্তা করল, তার মেয়েকে অন্য কোন ভাল ঘরে রেখে ভাল ভাবে বড় করা দরকার, যাতে সে পুত পবিত্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। চিলিং ওয়ার্থ ও এই বিষয়ে সায় দিচ্ছিল। তখন হেস্টার প্রাইন বলল, সে আমার মেয়ে, সে আমার সাথেই থাকবে, সে যদি চলে যায়, তাহলে আমি কাকে নিয়ে থাকবো। তখন ডিমস ডেল এ হেস্টার এর কথায় সায় দিল, তখন তারা নিজেদের কুটিরে চলে গেল। বিলিংহামের কাছে যখন পার্ল গেল তখন, জন উইলসন তাকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি কোথা থেকে এসেছো, তখন সে খুবি বিচক্ষণতার সহিত উত্তর দিল, আমি আমার মা থেকে জন্ম নিয়েছি, আর আমার মা আমাকে একটা গোলাপ বাগান থেকে তুলে এনেছিল, আর আমি প্রস্ফুটিত হয়েছি জেল খানার সামনে। এদিকে ডিমসডেল কিছুটা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলো, তার শরীরটাও দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। তখন চিলিংওয়ার্থকে তার চিকিৎসার জন্যে নিয়োগ করা হল। সে তখন জংগল থেকে বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করে তার চিকিৎসা শুরু করলো। কিন্তু তার শয়তানী চোখ গুলো তার উপর নিবদ্ধ ছিল, আর সে ডিমসডেল কে সন্দেহ করতো, হয়তো সেই তার স্ত্রীর সাথে এই অনৈতিক কাজ করেছে। তাই তিনি তার উপর প্রতিশোধ নিবেন। এদিকে ডিমসডেল জানতো না চিলিং ওয়ার্থ তার প্রাক্তন স্বামী।
এদিকে চিলিং ওয়ার্থ ডিমসডেলকে বললো, তার মনে যদি কোনন কস্ট থাকে তবে বলে ফেললে তার কস্ট কিছুটা লাঘব হবে।
একদিন রাত এ ডিমসডেল ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। গিয়ে উপস্থিত হলেন শাস্তি মঞ্চের সামনে। তিনি তখন সাত বছর আগের তার করা খারাপ কাজের চিন্তা করতে লাগলেন। তার জন্যেই এতো বছর ধরে একটা মেয়ে কস্ট করছে। বিষয় টা চিন্তা করে তার খুবি খারাপ লাগত লাগলো। কস্টে তিনি চিৎকার করে উঠলেন। তারপর আবার ভাবলেন, যদি সবাইকে জানিয়ে দেই তবে বিষয় টা আরো খারাপ হবে। তার চিৎকার শুনে কেউ না জাগলেও বিলিংহাম জেগে উঠলো, সে দেখতে পেল মঞ্চে কেউ সাদা জামা পড়ে দারিয়ে আছে। তার বোন হিবিন্সও এটা দেখতে পেল এবং ভাবল সেখানে কোন ডাইনি হয়তো দাঁড়িয়ে আছে। হঠাত করে ডিমসডেল দেখতে পেল সেই রাস্তা দিয়ে হেস্টার প্রাইন এবং পার্ল যাচ্ছে। কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে বলল, সাবেক গভর্নর উইনথ্রপ মৃত্যু শয্যায়, তাকে দেখতেই তারা বেরিয়েছিল। হেস্টার প্রাইন খেয়াল করলো, ডিমসডেল শুকিয়ে গিয়েছে। এ সময় চিলিং ওয়ার্থ কে তারা দেখতে পেল। চিলিংওয়ার্থ তাকে বলল, ডিমসডেল আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে তাই তার চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। তাকে সুস্থ করে তোলাই কাজ। কিছুদিন পরে হেস্টার আর পার্ল সমুদ্রের তীরে ঘোরাফেরা করছিল, তখন, চিলিংওয়ার্থের সাথে তার দেখা হল। তাকে জিজ্ঞাসা করলো তুমি ডিমসডেল এর সাথে এসব কি শুরু করেছ। সে তখন তাকে বলল সে ডিমসডেলকে সুস্থ করতে চায়। আসলে চিলিং ওয়ার্থ তাকে সুস্থ করছিলেন না, বরং তাকে আস্তে আস্তে মেরে ফেলছিল। তাই হেস্টার তাকে বলে এভাবে আস্তে আস্তে মারার চেয়ে একবারে মেরে ফেলাই ভাল। সে বলল হ্যা, তাই।
তাই তারা পরিকল্পনা করল তারা বিষয় টি ডিমসডেল কে জানাবে। একদিন তারা রাস্তায় হাটছিল তখন হেস্টার কে পার্ল জিজ্ঞসা করলো এই অক্ষরটি কে তাকে দিয়েছে। তখন সে বলল একজন কালো বুড়ো তাকে দিয়েছেন, সে সবাইকে বই দিতো, আর একটি কলম ধরিয়ে দিয়ে বলত সেখানে নাম লিখতে। তাদের কুটিরের মালিক পার্ল কে এই কথা বলেছে। তারপর পার্ল জিজ্ঞাসা করল, তোমার বুকের যে লাল অক্ষর টি, সেটি কি সেই কালো বুড়োই দিয়েছে? উত্তরে হেস্টার বলল হ্যা। তখন তারা দেখল ডিমসডেল আসছে, হেস্টার পার্ল কে বলল তুমি ঝরনার পাশে খেলা কর। পার্ল চলে গেলে, হেস্টার ডিমসডেল কে বলল, চিলিংওয়ার্থ হচ্ছে তার প্রাক্তন স্বামী, সে তার চিকিৎসা করছে না বরং সে আসলে তার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই বিষয়টি ডিমসডেল কে খুবি রাগান্বিত করল, তবে কিছুক্ষন পরে ডিমসডেল কিছুটা শান্ত হল, তারপর পরামর্শ করল, সিদ্ধান্ত নিল এই শহর ছেড়ে তারা চলে যাবে। যখন তারা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, তখন হেস্টারের খুব ভাল লাগলো, নিজেকে মুক্ত মনে হল। আনন্দে সে তার গলায় ঝোলানো অক্ষর টি ছিড়ে ফেলে দিল যা ভেসে ঝরনার এক কোনায় গিয়ে ঠেকলো। পরিকল্পনা মাফিক ডিমসডেল তাদের তিন জনের জন্যে, কিছুদিন পরে যে জাহাজটি আসবে তার তিনটি টিকিট কাটবে। তখন পার্লকে কাছে ডাকলে সে কিছুটা কাছে এসে আর সামনে আসে না, কি হয়েছে জানতে চাইলে, পার্ল তার মায়ের বুকের দিকে ইশারা করল। তখন আবার কাছে ডাকলে, পার্ল জিজ্ঞাসা করল, তার লাল অক্ষরটি কোথায়? মা তখন সেটি ঝরনার কিনারা থেকে আবার কুড়িয়ে পড়লেন। পার্ল খুব খুশি হল।
ডিমসডেল কিছুটা চিন্তিত ছিল, সে হিবিন্স এর কাছে খুলে বলল, সে বলল, আপনি কি তাহলে জংগলে যাবেন কালো মানুষদের সাথে দেখা করতে, ডিমসডেল কোন উত্তর দিল না। তারপর এলো গভর্নরের শপথের দিন, এই দিনটাকে তারা বিভিন্ন রকমের আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে পালন করে। শহরে সেদিন খুবি আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে কাটছিল। হেস্টার আর ডিমসডেল এর মনের ভেতরও খুবই আনন্দ, কারন তারা এই শহর ছেড়ে চলে যাবে। অন্য শহরে গিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। সেদিন শোভা যাত্রায় সবাই হেস্টার এর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিল, কারন তার গলায় এ অক্ষরটি ছিল।
এক সময় হেস্টার চিলিং ওয়ার্থ কে দেখতে পেল, আর সে অন্য কাউকে বলছে, কয়েকদিন পরে যে জাহাজটা আসছে, সে সেটায় করে চলে যাবে। এই কথা শুনে হেস্টার খুব রাগান্বিত হল। সে খুব মানসিক চাপে পড়ে গেল, এরকম একটি খুশির দিনে, এমন খারাপ সংবাদ শুনে তার ভাল লাগলো না। শোভাযাত্রা শেষে ডিমসডেল একটি নির্বাচনি ভাষন দিল। ভাষন শুনে সবাই তার খুব প্রশংসা করল। এরপর সে সেই বিচারের বেদিতে গেল। যাওয়ার সময় সে পড়ে যাচ্ছিল, কিন্তু হেস্টারের সহায়তায় সে উঠে দাড়ালো এবং তার কাধে ভর করে সেখানে গেল। তারপর সমবেত জনতাকে বলল, আজ থেকে ৭ বছর আগে হেস্টার এর বিচার হয়েছিল। সে এতো বছর ধরে একটি কলংক ভার বুকে নিয়ে ঘুরছে, তার মত আমিও একজন পাপী। ইশ্বর সেটা জানেন। তারপর সে তার বক্ষ উন্মুক্ত করে দেখালেন, সেখানেও একটি এ অক্ষর রয়েছে। তিনি আস্তে আস্তে মৃত্যুর মুখে ঢলে পরছিলেন, পার্ল কে কাছে ডাকলেন, তার কপালে একটি চুমু দিতে বললেন। সে তার বাবার কপালে চুমু দিল। তারপর তার মৃত্যু হল।
ডিমসডেল এর মৃত্যুর বছরখানেক পর চিলিং ওয়ার্থেরও মৃত্যু হয়। হেস্টার শহর ছেড়ে চলে যান। আর অনেক বছর পরে তিনি ফিরে আসেন, কিন্তু পার্ল কে নিয়ে আসেন নাই। আর চিলিন ওয়ার্থ মৃত্যু বরন করলে তার সব সম্পত্তির মালিক হল পার্ল। এদিকে সে অন্য একজন বড়লোকের ছেলেকে বিয়ে করে সুখেই ছিল। দীর্ঘ দিন এই শহরে থাকার পর হেস্টারের মৃত্যু হয়। তাকে ডিমস ডেল এর পাশেই কবর দেয়া হয়। দুইজনের কবরের মাঝে লাল একটি এ অক্ষর ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
স্কারলেট লেটার - রক্তিম লাল অক্ষর
মূল চরিত্র সমূহ
১. হেস্টার প্রাইন - মূল চরিত্র, স্কারলেট লেটার যার বুকে ছিল
২. আর্থার ডিমসডেল - পিউরিটান মিনিস্টার ও ধর্মজাযক - বোস্টন, পার্লের জন্মদাতা
৩. পার্ল - হেস্টার এবং ডিমসডেল এর অবৈধ সন্তান
৪. রজার চিলিংওয়ার্থ - হেস্টার এর বুড়ো স্বামী
৫. গভর্নর বিলিংহাম- বোস্টন এর আগের গভর্নর
৬. মিস্ট্রেস হিবিন্স - বিলিংহাম এর বোন
৭. জন উইলসন - বোস্টন এর বুড়ো পাদ্রী
ঘটনাঃ-
লেখক যখন সালেমের কাস্টম হাউজে সার্ভেয়র হিসেবে চাকরি করতেন, একবার তিনি লাল কাপড়ের মাঝে কিছু কাগজপত্র খুজে পেলেন এবং সেটার উপর একটি লাল "এ" অক্ষর ছিল। যা দেখে তিনি অবাক হলেন। অগ্রহ বশত তিনি তা খুলে দেখেন। এবং জানতে পারলেন সে লেখা গুলো লিখেছিলেন তার পূর্বে যিনি তার পদে আসীন ছিলেন। তার নাম ছিল জোনাথন পিউ। তাই তিনি সেই লেখা গুলো লিখে গিয়েছিলেন অন্য একজন বৃদ্ধের জবানী থেকে যার নাম ছিল হেস্টার প্রাইন। মূলত এই লেখা টা ছিল হেস্টার প্রাইন এর আত্মজীবনী। তারপর তিনি সেই লেখাটা কে এই নভেল এ পরিবর্তন করেছেন।
এই নভেলের ঘটনাটা শুরু হয় একটি জেলখানা থেকে, যেখানে একটি শাস্তিমঞ্চ ছিল। সেখানে উতসুক জনতা দাঁড়িয়ে আছে, আসলে সেখানে কি ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে সকলের আগ্রহ। সেখানে আসলে হেস্টার প্রাইন এবং রেভারেন্ড ডিমসডেল এর অনৈতিক সম্পর্কের কারনে তাদের শাস্তি হবে। হেস্টার প্রাইন এর কোলে একটি বাচ্চা। যার নাম পার্ল। সেখানে বোস্টন শহরের গভর্নর, পাদ্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিল। পার্ল তার পেটে থাকা অবস্থায় তাকে জেলে পোড়া হয়েছিল। যখন পার্ল এর জন্ম হল তখন তাকে এখানে এই জনতার মঞ্চে আনা হল, তখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করতে লাগলো, কেউ ভাল, কেউ খারাপ।
আর ব্যাপারটা ছিল হেস্টার প্রাইন আর আর্থার ডিমসডেল এর অনৈতিক কাজ এর বিচার, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে জনতা এবং পাদ্রী, গভর্নর কেউই জানে না তার হেস্টার প্রাইন কার সাথে অনৈতিক কাজ করেছে। এমনকি হেস্টার প্রাইন কে অনেকবার জিজ্ঞাসা করার পরও সে কাউকে বলে নাই, সেই ব্যাক্তি টি কে। তাকে তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হল। কেউ একজন মন্তব্য করল যে তার গলায় ঝোলানো "এ" অক্ষর টি দেখা যাচ্ছে না। বিচারের রায় ছিল যে, তাকে আজীবন গলায় এই অক্ষরটি ঝুলিয়ে রাখতে হবে। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে এই বিচারের ভার পড়েছিল, রেভারেন্ড আর্থার ডিমসডেল এর উপর। কিছুক্ষন পরে দেখল একজন লোক তাকে এক দৃষ্টিতে দেখছে, তাকে সে চিনতে পারল, সে তার প্রাক্তন স্বামী রজার চিলিংওয়ার্থ। সে জনতাকে জিজ্ঞাসা করল, তাকে কেন এই মঞ্চে দাড় করানো হয়েছে, জনতা তাকে হেস্টার প্রাইন এর পাপ কর্মের কথা বলল। হেস্টার তাকে কিছু একটা বলতে চাইল। কিন্তু চিলিং ওয়ার্থ তাকে ইশারা করে চুপ করিয়ে দিল। তারপর তাকে জেল খানায় নিয়ে যাওয়া হল।
হেস্টার প্রাইন এর কোলে ছোট্ট পার্ল
চিলিং ওয়ার্থ যখন হেস্টার প্রাইন কে ছেড়ে যায়, তখন সে রেড ইন্ডিয়ানদের সাথে যোগ দিয়ে ভেষজ উদ্ভিদ এবং এর মাধ্যমে চিকিৎসা পদ্ধতি শিখে নিয়েছিল। এদিকে জেলখানায় যখন পার্ল অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন পার্ল এর চিকিৎসার জন্যে চিলিংওয়ার্থ এর ডাক পড়ে। হেস্টার প্রাইন এতে রাজি হন না, কারন সে মনে করে চিলিংওয়ার্থ তার কন্যাকে মেরে ফেলবে। তখন চিলিং ওয়ার্থ তাকে প্রবোধ দেয় যে, তুমি যে পাপ করেছো, তার শাস্তি তুমি পেয়েছো, তোমার সন্তান তো কোন অপরাধ করে নাই, তাকে কেন তুমি কস্ট দিচ্ছ। তখন হেস্টার প্রাইন রাজি হল। পার্ল খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেল। এরপর হেস্টার প্রাইন যখন জেল থেকে ছাড়া পেল, সে তখন চিন্তা করল এই শহর থেকে সে চলে যাবে। পরক্ষনে সে তার চিন্তা করল, তার প্রেমিক ডিমসডেল এই শহরে থাকে, তাই সে এই শহর ছেড়ে যাবে না। সে শহরের কাছেই পাহাড়ি এলাকায় একটি ঘর নিয়ে থাকল। তার একটি গুন ছিল সে খুব ভাল সুচি কার্য জানতো। সে কাজ শুরু করল এবং তার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। পাশাপাশি তিনি আসে পাশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যায় এগিয়ে যেতেন। সকলের দুঃখ কস্টের খোজ খবর রাখতেন ও মানুষকে সাহায্য করতেন। তিনি তার আসে পাশে বিখ্যাত হয়ে গেলেন। তার বক্ষে যে একটি কলংক জনক অক্ষর ঝুলছে তা তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন। অবশ্য এই অক্ষরটি তাকে তার পাপের কথা মনে করিয়ে দিত। তিনি এটা খুলতেন না, কারনে তিনি মনে করতেন এটা যতক্ষন তার গলায় থাকবে তিনি পাপমুক্ত থাকবেন।
একবার তারা গভর্নর বিলিংহামের কাছে গেল। বিলিংহাম তাকে একটি দস্তানা বানানোর কাজ দিয়েছিল। তারা সেটা নিয়েই সেখানে গিয়েছিল। গভর্নর তাকে ডাকার আরো একটি কারন ছিল, সে একটি বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। যেহেতু হেস্টার একজন পাপী তাই তার সাথে থেকে থেকে তার মেয়েও একজন পাপী হিসেবে গড়ে উঠবে। তাই সে চিন্তা করল, তার মেয়েকে অন্য কোন ভাল ঘরে রেখে ভাল ভাবে বড় করা দরকার, যাতে সে পুত পবিত্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। চিলিং ওয়ার্থ ও এই বিষয়ে সায় দিচ্ছিল। তখন হেস্টার প্রাইন বলল, সে আমার মেয়ে, সে আমার সাথেই থাকবে, সে যদি চলে যায়, তাহলে আমি কাকে নিয়ে থাকবো। তখন ডিমস ডেল এ হেস্টার এর কথায় সায় দিল, তখন তারা নিজেদের কুটিরে চলে গেল। বিলিংহামের কাছে যখন পার্ল গেল তখন, জন উইলসন তাকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি কোথা থেকে এসেছো, তখন সে খুবি বিচক্ষণতার সহিত উত্তর দিল, আমি আমার মা থেকে জন্ম নিয়েছি, আর আমার মা আমাকে একটা গোলাপ বাগান থেকে তুলে এনেছিল, আর আমি প্রস্ফুটিত হয়েছি জেল খানার সামনে। এদিকে ডিমসডেল কিছুটা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলো, তার শরীরটাও দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। তখন চিলিংওয়ার্থকে তার চিকিৎসার জন্যে নিয়োগ করা হল। সে তখন জংগল থেকে বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করে তার চিকিৎসা শুরু করলো। কিন্তু তার শয়তানী চোখ গুলো তার উপর নিবদ্ধ ছিল, আর সে ডিমসডেল কে সন্দেহ করতো, হয়তো সেই তার স্ত্রীর সাথে এই অনৈতিক কাজ করেছে। তাই তিনি তার উপর প্রতিশোধ নিবেন। এদিকে ডিমসডেল জানতো না চিলিং ওয়ার্থ তার প্রাক্তন স্বামী।
এদিকে চিলিং ওয়ার্থ ডিমসডেলকে বললো, তার মনে যদি কোনন কস্ট থাকে তবে বলে ফেললে তার কস্ট কিছুটা লাঘব হবে।
একদিন রাত এ ডিমসডেল ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। গিয়ে উপস্থিত হলেন শাস্তি মঞ্চের সামনে। তিনি তখন সাত বছর আগের তার করা খারাপ কাজের চিন্তা করতে লাগলেন। তার জন্যেই এতো বছর ধরে একটা মেয়ে কস্ট করছে। বিষয় টা চিন্তা করে তার খুবি খারাপ লাগত লাগলো। কস্টে তিনি চিৎকার করে উঠলেন। তারপর আবার ভাবলেন, যদি সবাইকে জানিয়ে দেই তবে বিষয় টা আরো খারাপ হবে। তার চিৎকার শুনে কেউ না জাগলেও বিলিংহাম জেগে উঠলো, সে দেখতে পেল মঞ্চে কেউ সাদা জামা পড়ে দারিয়ে আছে। তার বোন হিবিন্সও এটা দেখতে পেল এবং ভাবল সেখানে কোন ডাইনি হয়তো দাঁড়িয়ে আছে। হঠাত করে ডিমসডেল দেখতে পেল সেই রাস্তা দিয়ে হেস্টার প্রাইন এবং পার্ল যাচ্ছে। কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে বলল, সাবেক গভর্নর উইনথ্রপ মৃত্যু শয্যায়, তাকে দেখতেই তারা বেরিয়েছিল। হেস্টার প্রাইন খেয়াল করলো, ডিমসডেল শুকিয়ে গিয়েছে। এ সময় চিলিং ওয়ার্থ কে তারা দেখতে পেল। চিলিংওয়ার্থ তাকে বলল, ডিমসডেল আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে তাই তার চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। তাকে সুস্থ করে তোলাই কাজ। কিছুদিন পরে হেস্টার আর পার্ল সমুদ্রের তীরে ঘোরাফেরা করছিল, তখন, চিলিংওয়ার্থের সাথে তার দেখা হল। তাকে জিজ্ঞাসা করলো তুমি ডিমসডেল এর সাথে এসব কি শুরু করেছ। সে তখন তাকে বলল সে ডিমসডেলকে সুস্থ করতে চায়। আসলে চিলিং ওয়ার্থ তাকে সুস্থ করছিলেন না, বরং তাকে আস্তে আস্তে মেরে ফেলছিল। তাই হেস্টার তাকে বলে এভাবে আস্তে আস্তে মারার চেয়ে একবারে মেরে ফেলাই ভাল। সে বলল হ্যা, তাই।
তাই তারা পরিকল্পনা করল তারা বিষয় টি ডিমসডেল কে জানাবে। একদিন তারা রাস্তায় হাটছিল তখন হেস্টার কে পার্ল জিজ্ঞসা করলো এই অক্ষরটি কে তাকে দিয়েছে। তখন সে বলল একজন কালো বুড়ো তাকে দিয়েছেন, সে সবাইকে বই দিতো, আর একটি কলম ধরিয়ে দিয়ে বলত সেখানে নাম লিখতে। তাদের কুটিরের মালিক পার্ল কে এই কথা বলেছে। তারপর পার্ল জিজ্ঞাসা করল, তোমার বুকের যে লাল অক্ষর টি, সেটি কি সেই কালো বুড়োই দিয়েছে? উত্তরে হেস্টার বলল হ্যা। তখন তারা দেখল ডিমসডেল আসছে, হেস্টার পার্ল কে বলল তুমি ঝরনার পাশে খেলা কর। পার্ল চলে গেলে, হেস্টার ডিমসডেল কে বলল, চিলিংওয়ার্থ হচ্ছে তার প্রাক্তন স্বামী, সে তার চিকিৎসা করছে না বরং সে আসলে তার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই বিষয়টি ডিমসডেল কে খুবি রাগান্বিত করল, তবে কিছুক্ষন পরে ডিমসডেল কিছুটা শান্ত হল, তারপর পরামর্শ করল, সিদ্ধান্ত নিল এই শহর ছেড়ে তারা চলে যাবে। যখন তারা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, তখন হেস্টারের খুব ভাল লাগলো, নিজেকে মুক্ত মনে হল। আনন্দে সে তার গলায় ঝোলানো অক্ষর টি ছিড়ে ফেলে দিল যা ভেসে ঝরনার এক কোনায় গিয়ে ঠেকলো। পরিকল্পনা মাফিক ডিমসডেল তাদের তিন জনের জন্যে, কিছুদিন পরে যে জাহাজটি আসবে তার তিনটি টিকিট কাটবে। তখন পার্লকে কাছে ডাকলে সে কিছুটা কাছে এসে আর সামনে আসে না, কি হয়েছে জানতে চাইলে, পার্ল তার মায়ের বুকের দিকে ইশারা করল। তখন আবার কাছে ডাকলে, পার্ল জিজ্ঞাসা করল, তার লাল অক্ষরটি কোথায়? মা তখন সেটি ঝরনার কিনারা থেকে আবার কুড়িয়ে পড়লেন। পার্ল খুব খুশি হল।
ডিমসডেল কিছুটা চিন্তিত ছিল, সে হিবিন্স এর কাছে খুলে বলল, সে বলল, আপনি কি তাহলে জংগলে যাবেন কালো মানুষদের সাথে দেখা করতে, ডিমসডেল কোন উত্তর দিল না। তারপর এলো গভর্নরের শপথের দিন, এই দিনটাকে তারা বিভিন্ন রকমের আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে পালন করে। শহরে সেদিন খুবি আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে কাটছিল। হেস্টার আর ডিমসডেল এর মনের ভেতরও খুবই আনন্দ, কারন তারা এই শহর ছেড়ে চলে যাবে। অন্য শহরে গিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। সেদিন শোভা যাত্রায় সবাই হেস্টার এর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিল, কারন তার গলায় এ অক্ষরটি ছিল।
এক সময় হেস্টার চিলিং ওয়ার্থ কে দেখতে পেল, আর সে অন্য কাউকে বলছে, কয়েকদিন পরে যে জাহাজটা আসছে, সে সেটায় করে চলে যাবে। এই কথা শুনে হেস্টার খুব রাগান্বিত হল। সে খুব মানসিক চাপে পড়ে গেল, এরকম একটি খুশির দিনে, এমন খারাপ সংবাদ শুনে তার ভাল লাগলো না। শোভাযাত্রা শেষে ডিমসডেল একটি নির্বাচনি ভাষন দিল। ভাষন শুনে সবাই তার খুব প্রশংসা করল। এরপর সে সেই বিচারের বেদিতে গেল। যাওয়ার সময় সে পড়ে যাচ্ছিল, কিন্তু হেস্টারের সহায়তায় সে উঠে দাড়ালো এবং তার কাধে ভর করে সেখানে গেল। তারপর সমবেত জনতাকে বলল, আজ থেকে ৭ বছর আগে হেস্টার এর বিচার হয়েছিল। সে এতো বছর ধরে একটি কলংক ভার বুকে নিয়ে ঘুরছে, তার মত আমিও একজন পাপী। ইশ্বর সেটা জানেন। তারপর সে তার বক্ষ উন্মুক্ত করে দেখালেন, সেখানেও একটি এ অক্ষর রয়েছে। তিনি আস্তে আস্তে মৃত্যুর মুখে ঢলে পরছিলেন, পার্ল কে কাছে ডাকলেন, তার কপালে একটি চুমু দিতে বললেন। সে তার বাবার কপালে চুমু দিল। তারপর তার মৃত্যু হল।
ডিমসডেল এর মৃত্যুর বছরখানেক পর চিলিং ওয়ার্থেরও মৃত্যু হয়। হেস্টার শহর ছেড়ে চলে যান। আর অনেক বছর পরে তিনি ফিরে আসেন, কিন্তু পার্ল কে নিয়ে আসেন নাই। আর চিলিন ওয়ার্থ মৃত্যু বরন করলে তার সব সম্পত্তির মালিক হল পার্ল। এদিকে সে অন্য একজন বড়লোকের ছেলেকে বিয়ে করে সুখেই ছিল। দীর্ঘ দিন এই শহরে থাকার পর হেস্টারের মৃত্যু হয়। তাকে ডিমস ডেল এর পাশেই কবর দেয়া হয়। দুইজনের কবরের মাঝে লাল একটি এ অক্ষর ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
No comments:
Post a Comment
Thank you for commenting