ট্রয়লাস এন্ড ক্রিসেড
জিওফ্রে চসার
চরিত্রসমূহ
১। ট্রয়লাস
২। ক্রিসেড
৩। প্যান্ডারাস
৪। ক্যালচাস
৫। হেক্টর
৬। এন্টেনর
৭। ডাইওমিডিস
৮। ডেইফেবাস
৯। বর্ণনাকারী
ঘটনাটি ঘটেছিল ট্রয়ের অবরোধের সময়। ক্যালচাস নামক একজন ট্রোজান ভবিষ্যৎবক্তা ভবিষ্যতবাণী করে যে শীঘ্রই ট্রয়ের পতন ঘটবে, ভয়ে ভীত হয়ে তার কন্যা ক্রিসেডকে রেখেই শহর ছেড়ে পালায় এবং গ্রিকদের প্রতি তাঁর আনুগত্য পরিবর্তন করে। তার পিতার এই পলায়ন ট্রোজানরা ভালো চোখে দেখে না বরং তার পিতার কাজের জন্যে তাকে খুবই অবজ্ঞা প্রদর্শন ও ভৎসনা করা হয়।
ট্রোজানরা ছিল দেবতাভক্ত। তাই যুদ্ধচলাকালীন সময়েও তারা বিভিন্ন উৎসবের ব্যাপারে কোন উদাসীনতা দেখাতো না। এপ্রিল মাসে যখন চারনভূমি ফুলে ভরে গেলো তারা প্যালাডিয়াম বা প্যাল্লাস এথেনার মন্দিরে ভোজের আয়োজন করল। এই কব্যের নায়ক ট্রয়লাস ছিল একজন যুবক বীর যোদ্ধা । কিন্তু সে প্রেম ভালোবাসার প্রতি ছিল উদাসিন। সবসময় সে প্রেমিকদের নিয়ে হাসাহাসি করতো। তাদের কষ্ট দেখে মজা পেত। প্রেমের দেবতা কিউপিডের এটা পসন্দ হল না। সে রেগে গেল এবং এর প্রতিশোধ নিতে চাইল।
ভোজ উৎসবের দিন সবার মত সেও প্যালাডিয়ামে গেল।
আর তার চোখে পড়ল ক্যালচাস এর সুন্দরী কন্যা ক্রিসেড কে। প্রথম দেখায়ই তাকে ভালো লেগে গেল এবং সে তার প্রেমে পড়ে গেল। ক্রীসেড এর চাচা প্যান্ডারাস তাকে অনুতাপ করার এবং ভালোবাসার দেবতার প্রতি অনুগত হওয়ার পরামর্শ দিলেন। আর তাকে ক্রীসেডকে লেখার জন্যে সাহায্য করলেন। এদিকে সে তার ভাতিজির সাথে দেখা করে ট্রয়লাসের ভালোবাসার কথা জানালেন। তাকে আনন্দিত হতে বললেন। এটাও বললেন, যদি সে ট্রয়লাসকে সে ভালো না বাসে তবে ট্রয়লাস এবং সে দুইজনেই আত্মহত্যা করবে। তাকে মনে করিয়ে দিলেন সে আর এখন ছোট্টটি নেই। ট্রয়লাস যুদ্ধ থেকে ফেরার পরে সে যখন রাস্তা দিয়ে হাটছিল,জানালা দিয়ে ক্রীসেড তাকে দেখলেন, আর তার অরক্ষিত অবস্থার কথা ভাবলেন, তার এখন সামাজিক নিরাপত্তার দরকার। সে তখন তার বান্ধবীদের নিয়ে বাগানে গেলো, আর এন্টিগনের মুখে ভালোবাসার গান শুনল। রাতের বেলা বিছানায় গিয়ে সে স্বপ্নে দেখলো, একটি সাদা ঈগল তার হৃদয় বুক থেকে খুলে নিয়ে সেখানে তার নিজের হৃদয় প্রতিস্থাপন করে দিল।
তারপর তারা চিঠি লেখা শুরু করতে লাগল। এ কাজে প্যান্ডারাস তাদেরকে সাহায্য করতে লাগলো। এমনকি চিঠিতে কি লিখবে তাও সে বলে দিতে লাগল। ক্রীসেড চিঠি লেখার প্রতি কিছুটা উদাসীন ছিল কিন্তু তার চাচা তাকে জোর তাগাদা দিয়ে চিঠি লেখাতো।
প্যান্ডারাস পরিকল্পনা করলেন ডেইফেবাস এর বাড়ীতে এই দুই জনের দেখা করিয়ে দেবেন। এরপর প্যান্ডারাস ট্রয়লাস কে ডেইফেবাস এর বাড়ীতে নিয়ে আসলেন, আর তাকে পরামর্শ দিলেন, অসুস্থতার ভান করে সে যেনো ঘরে চলে যায়। ট্রয়লাস তার কথামত কাজ করল আর এই প্রথম ক্রীসেড এর সাথে সরাসরি সাক্ষাত হলো।
প্যান্ডারাস তাকে পরামর্শ দিল ক্রিসেড কে সম্মান দিয়ে কথা বলতে, ট্রয়লাস তাকে বলল সে তাই করবে। এরপর তাদের মাঝে আবার চিঠি চালাচালি হতে লাগল। কোন এক দিন বিকেলে ক্রিসেড প্যান্ডারাসের বাসায় এলো, তখন বৃষ্টি নামলে সে তাকে তার বাসায় থেকে যেতে বলল। আর ট্রয়লাস গোপনে তা দেখছিল। প্যান্ডারাস ক্রিসেড কে তার বাসার গোপন ঘরে নিয়ে যান। তারপর সেখানে ট্রয়লাস এর সাথে দেখা করিয়ে দেয়। প্যান্ডারাস ট্রয়লাসকে ভাগ্যের দেবীর ব্যাপারে সাবধান করে দেয়।
Troilus and Criseyde – Geoffrey Chaucer - Bangla - ট্রয়লাস এন্ড ক্রিসেড জিওফ্রে চসার পর্ব ২(শেষ পর্ব)
১ম পর্বের পর থেকে
এদিকে একবার ট্রোজানরা গ্রীকদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে বন্দি বিনিময় করে। কারন তাদের বিখ্যাত যোদ্ধা এন্টেনর গ্রীকদের হাতে গ্রেফতার হয়। ক্যালচাস গ্রীক শিবিরে খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । সে রাজা আগামেমনন এর সাথে যোগাযোগ করে তার মেয়ের ব্যাপারে কথা বলে ও এন্টেনরের বিনিময়ে তার মেয়েকে গ্রীক শিবিরে আনার ব্যবস্থা করে।
এই বিনিময়ে বীর হেক্টর প্রথমে ভেটো দিলেও, এন্টেনরের কথা চিন্তা করে সে রাজী হয়ে যায়। ট্রয়লাস বিলাপ করা শুরু করল, ভাগ্য তার সাথে সবসময় খেলা করছে।
১ম পর্বের পর থেকে
এদিকে একবার ট্রোজানরা গ্রীকদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে বন্দি বিনিময় করে। কারন তাদের বিখ্যাত যোদ্ধা এন্টেনর গ্রীকদের হাতে গ্রেফতার হয়। ক্যালচাস গ্রীক শিবিরে খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । সে রাজা আগামেমনন এর সাথে যোগাযোগ করে তার মেয়ের ব্যাপারে কথা বলে ও এন্টেনরের বিনিময়ে তার মেয়েকে গ্রীক শিবিরে আনার ব্যবস্থা করে।
এই বিনিময়ে বীর হেক্টর প্রথমে ভেটো দিলেও, এন্টেনরের কথা চিন্তা করে সে রাজী হয়ে যায়। ট্রয়লাস বিলাপ করা শুরু করল, ভাগ্য তার সাথে সবসময় খেলা করছে।
প্যান্ডারাস এর সাথে সে পরামর্শ করল। সে তাকে পরামর্শ দিল নতুন কাউকে খুজে নিতে। কিন্তু সে এই বুদ্ধি নাকচ করে দিল। তারপর তাকে পরামর্শ দিল তার সাথে পালিয়ে যেতে। আবার এটাও বলে দিল যে যেহেতু সে একজন সাহসী যোদ্ধা, তার জন্যে এমন কিছু করা মানাবে না যা তার সম্মান ধ্বংশ করে দেয়।
ট্রয়লাস এবং ক্রিসেড আবার দেখা করল। তাকে দেখে ক্রিসেড প্রথমে অজ্ঞান হয়ে গেল। ট্রয়লাস তার তরবারী বের করে নিজের গায়ে প্রবেশ করাতে উদ্দত হল। এ সময় তার জ্ঞান ফিরল আর ট্রয়লাসকে সে এই কাজ থেকে নিবৃত্ত্ব করল। ক্রিসেড তাকে আশ্বস্থ করলো যে সে তার সম্মান নষ্ট করতে চায় না। সে বরং তার পিতার সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিবে।
১০ দিনের মাঝেই সে পালিয়ে ফিরে আসবে। ট্রয়লাস তার কাছ থেকে এক প্রকারের মৃত্যুর স্বাদ নিয়ে ফিরে আসল যেন।
১০ দিনের মাঝেই সে পালিয়ে ফিরে আসবে। ট্রয়লাস তার কাছ থেকে এক প্রকারের মৃত্যুর স্বাদ নিয়ে ফিরে আসল যেন।
ক্রিসেড কে দেখার পর তিনটি বছর পার হয়ে যায়। সে গ্রীক শিবিরে যাওয়ার পর ডিওমিড তার নিরাপত্তার ভার নিয়ে নেয়।
এদিকে প্যান্ডারাস ট্রয়লাসকে সার্পেডন এর ভিলাতে নিয়ে আসে। সেখানে সবাই আনন্দ ফুর্তি করতে আসে। ট্রয়লাস খেয়াল করল সে একা হলেই দূঃস্বপ্ন দেখে। ট্রয়লাস পূর্বের সুখের স্মৃতিচারন করে দিন পার করছিল। আর ক্রিসেড ছিল নিরাপত্তা প্রত্যাশী, তাই সে ডিওমিড কে তার সাথে প্রেমের খেলায় সাড়া দিল।
যখন তার প্রেয়সী ফিরে আসছিল না, তখন ট্রয়লাস স্বপ্ন দেখল, একটি বন্য শূকর তার প্রেমিকাকে নিয়ে যাচ্ছে। সকালে সে ক্রিসেড কে সে একটি হৃদয়গ্রাহী চিঠি লিখল। জানতে চাইলো কেনো সে আসে নি। সে তারপর কাসান্দ্রার কাছে তার স্বপ্নের অর্থ জানতে গেল। সে বলল এই বন্য শূকরটি হল তার নতুন প্রেমিক। সে এটা বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে তার নতুন প্রেমিক থাকতে পারে।
সে এরপর তাকে আরো চিঠি লিখলো। কিন্তু খুব সংক্ষিপ্ত আকারে জবাব এলো, তবে সে ফিরে আসার কথা বলেছিল। এক সময় ডিওমিডের একটি জামা ট্রোজানদের হাতে পড়ল। সেখানে সে একটি ব্রৌচ পেল যা ট্রয়লাস ক্রিসেড কে দিয়েছিল। সে বিলাপ করতে লাগলো, কারন সে এখনো তাকে ভালোবাসে। এই প্রথম প্যান্ডারাস তাকে কোন উপদেশ দিতে পারলো না। সেও অন্তরে খুব ব্যাথা অনুভব করলো। ট্রয়লাস ডিওমিডকে যুদ্ধে হত্যা করতে চাইলো, এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের দেখাও হয়েছিল, কিন্তু তাদের ভাগ্যে একে অপরের হাতে মৃত্যু লেখা ছিল না বরং ট্রয়লাস একিলিসের হাতে নিহত হয়।
এরপর ট্রয়লাসের আত্মা আকাশের শেষ স্তরে গিয়ে সকল প্রেমিক কে নিয়ে হাসতে লাগল। বর্ণনাকারী এরপর তার সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে শেষ করে দেন আর মনে করিয়ে দেন মানুষের জীবনটা খুব ক্ষণস্থায়ী।
No comments:
Post a Comment
Thank you for commenting